হার্টের রোগীর খাবারের তালিকা
আমরা নিয়মিত খাদ্য অভ্যাস পরিবর্তনের মাধ্যমে হার্ট ভালো রাখতে পারি। অনেক ধরনের খাবার আছে যা আমাদের হৃদপিণ্ডকে ভালো রাখতে সাহায্য করে। হার্টের সমস্যা নিয়ে অনেক মানুষ মারা যাচ্ছে শুধুমাত্র তাদের খাদ্য অভ্যাস ঠিক না করার কারণে শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাও কমে যাচ্ছে।
হার্টের রোগীদের কি ধরনের খাবার খাবার প্রয়োজন আমরা এই আর্টিকেলের মাধ্যমে বিস্তারিত জানতে পারবো। যারা প্রতিদিন বাইরের তেল মশলা জাতীয় খাবার খেয়ে থাকে তাদের জন্য হার্টের সমস্যা হওয়া খুবই সহজ। খাবারের দিকে সচেতন হওয়া সবার দরকার।
ভুমিকা
অনেকে ধারনা থাকে যে বয়স্ক মানুষের হয়তো হাটের সমস্যা হয় এ ধারণা একেবারেই ভুল এখন বয়স্ক এবং কম বয়সীদের সমস্যা হয় কারণ খাবারের বিভিন্ন ধরনের কেমিক্যাল মেশানো হয় এবং অনিয়মিত খাওয়ার অভ্যাসের কারণে এ সমস্যা হয়ে থাকে। হার্টের রোগীরা একেবারেই বাইরের খাবার খেতে পারবে না। অস্বাস্থ্যকর খাবার থেকেই হার্টের সমস্যা বেশি দেখা দেয় যার কারণে খাবারের তালিকা আমাদের জানা বিশেষ দরকার।
হার্টের রোগীর খাবারের তালিকা
নিচে কিছু খাবারের তালিকা দেওয়া হলো যা হার্টের রোগীদের জন্য অনেক প্রয়োজন এবং এই খাবারগুলি নিয়মিত নিয়ম মেনে খেলে হার্টের সমস্যা অনেকটাই কমে যাবে।
বিটরুট
হার্টের রোগীদের জন্য বিটরুট খুবই উপকারী একটি খাবার। বিটরুটে অনেক উপকারী উপাদান রয়েছে যেমন ভিটামিন এ, ভিটামিন কে, আইরন, পটাশিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম ও অন্যান্য প্রয়োজনীয় পুষ্টিগুণ। বিটরুটে থাকা আইরন আমাদের রক্তস্বল্পতার ঝুঁকি কমায় এতে রয়েছে ভিটামিন সি যা আমাদের শরীরের জন্য খুবই উপকারী। প্রচুর পরিমাণে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ও পিগমেন্ট রয়েছে বিটরুটে যা শরীরের নানা রকম রোগের বিরুদ্ধে কাজ করে। বিটরুটে রয়েছে পটাশিয়াম ও মিনারেল যা আমাদের হার্ট ভালো রাখতে সাহায্য করে। এছাড়াও বিটরুট ক্যান্সারের প্রতিরোধ করতে বিশেষভাবে সাহায্য করে। প্রতিদিনের খাবারের তালিকায় বিট রুট রাখা হার্টের রোগীদের জন্য খুবই উপকারী।
ব্রকোলি
ব্রকোলি একটি শীতকালীন সবজি। ব্রকোলি হার্টের রোগীদের জন্য অনেক উপকারী একটি সবজি। ব্রকলিতে যে ধরনের উপকারী উপাদান রয়েছে তা হার্টের জন্য খুবই ভালো। এতে রয়েছে ক্যালসিয়াম,পটাশিয়া্ম, ফলেড আঁশ আছে। এছাড়াও ভিটামিন এ এবং ভিটামিন সি ব্রকোলিতে প্রচুর পরিমাণে রয়েছে । আঁশ জাতীয় খাবার হার্টের রোগীদের জন্য খুবই উপকারী।
আরো পড়ুনঃ ডায়াবেটিক রোগীর খাবারের তালিকা
হার্টের রোগীদের জন্য ভিটামিন সি খুবই দরকার আর এই ব্রকোলিতে লেবুর চাইতে দ্বিগুণ ভিটামিন সি আছে এছাড়াও এতে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন এ রয়েছে যা ব্যাকটেরিয়ার সংক্রমণ হতে বাধা দেয় এবং সর্দি কাশি থেকে মুক্তি পাওয়া যায়। হার্টের রোগীদের ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখা খুবই প্রয়োজন ব্রকোলিতে চর্বি ও ক্যালরি কম যার কারণে এই সবজিটি খেলে কোন ধরনের ওজন বাড়ার ভয় নেই এছাড়াও এতে রয়েছে লৌহ শরীরের ঝিমঝিম ভাব দূর করে।
বেগুন
বেগুন এমন একটি সবজি যা হার্টের রোগীদের খাবারের তালিকায় রাখা উচিত। বেগুনে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ফাইবার যা হার্টের রোগীর প্রয়োজন। এছাড়াও প্রচুর পরিমাণে এন্টিঅক্সিডেন্ট এবং ফাইবার থাকার কারণে শরীর থেকে টক্সিন বের করতে সাহায্য করে। বেগুনে রয়েছে ভিটামিন বি সিক্স, ফ্ল্যাভোনয়েডস যা হার্টের সমস্যা দূর করে।
হার্টের রোগীদের প্রতিদিনের খাবারের বেগুন রাখাটা বিশেষ প্রয়োজন। তালিকায় প্রতিদিন বেগুন রাখলে হার্ট অ্যাটাকের আশঙ্কা কমায়। বেগুনের ফাইবার থাকার কারণে খিদে কমাতে সাহায্য করে এবং ওজনও কমায়। বেগুনে রয়েছে পটাশিয়াম যা আমাদের রক্তচাপ ঠিক রাখতে সাহায্য করে এছাড়াও জেনিক এসিডের মত শক্তিশালী অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট রয়েছে বেগুনে এই শক্তিশালী উপাদান কোলেস্টেরলের পরিমাণ কমিয়ে দেয়। বেগুন শুধু হার্ট না মস্তিষ্কও ভালো রাখতে সাহায্য করে।
কমলা
হার্টের রোগীরা প্রতিদিনের খাবারের তালিকায় কমলা রাখতে পারেন। কমলা রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়। কমলা ভিটামিন সি এ ভরপুর। অধিক পরিমাণে ভিটামিন সি থাকায় হার্ট ভালো রাখতে সাহায্য করে। শুধু হার্টের জন্য নয় কোলেস্টেরল কমাতে, ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে, চোখের জন্য আরো এ ধরনের অনেক রোগের প্রতিকার হিসাবে কমলা খেতে পারি। মোলাতে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন সি থাকে এছাড়াও রয়েছে ভিটামিন এ, ভিটামিন বি, ক্যালসিয়াম, পটাশিয়াম,ম্যাগনেসিয়াম ইত্যাদি উপাদান।
আপেল
ছোট বড় সবাই আমরা আপেল খেতে অনেক পছন্দ করি। আপেলে রয়েছে অনেক পুষ্টিগুণ যা আমাদের হার্ট ভালো রাখতে সাহায্য করে। ক্যালোরি, আমিষ, শর্করা, ফাইবার, ভিটামিন এ, ভিটামিন সি, ভিটামিন ই, পটাশিয়াম, ক্যালসিয়াম, সোডিয়াম এরকম আরো অনেক উপাদান আপেলে রয়েছে।এছাড়াও আপেলে রয়েছে ফাইটোনিউট্রিয়েন্ট উপাদান যা হাটকে সুস্থ রাখতে সাহায্য করে।আপেলের মধ্যে যে ফাইবার রয়েছে তা দেহের রক্ত চলাচল করতে সহজ ভাবে সাহায্য করে এবং কোলেস্টেরল কমাতে সাহায্য করে।প্রতিদিনের খাবারে আপেল লেখাটা বিশেষ দরকার আপেল ওজন কমাতেও সাহায্য করে যার কারণে শরীর সুস্থ থাকে এবং হার্ট ভালো থাকে।
কলা
হার্টের রোগীদের প্রতিদিনের খাবারের তালিকায় কলা থাকাটা বিশেষ প্রয়োজনীয়। কলাতে রয়েছে ভিটামিন সি, ভিটামিন বি, ম্যাগনিস, পটাশিয়াম, ফাইবার। হার্টের রোগীদের জন্য এই ধরনের পুষ্টিগুণ খুবই প্রয়োজনীয় তাই প্রতিদিন কলা খাওয়াটা হার্টের রোগীদের প্রয়োজন কলাতে যে ফাইবার আছে তা হার্টের রোগীর জন্য অত্যন্ত প্রয়োজনীয় পুষ্টিগুণ ওজন কমাতেও সাহায্য করে। করিলে শক্তির কমে গেলে কলা সেই শক্তিটা ধরে রাখে। রাশিয়ান হার্ট ভালো রাখার উন্নতম উপাদান যা কলাতে প্রচুর পরিমাণে রয়েছে।এটি রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখতে সাহায্য করে।
পালং শাক
পালং শাক শীতকালীয় এক ধরনের সবজি। আমরা অনেকেই এই শাক পছন্দ করি। এই পালং শাকের অনেক গুণ আছে যা হার্ট ভালো রাখতে বিশেষভাবে কাজ করে।পালং শাকে রয়েছে প্রোটিন, আইরন কার্বোহাইড্রেট, ফসফরাস, ক্যালসিয়াম, পটাশিয়াম ইত্যাদি উপাদান।পালং শাক রক্তচাপ কমাতে সাহায্য করে যা হার্টের জন্য খুবই দরকার এবং ওজন কমাতেও সাহায্য করে এতে করে আমাদের হার্ট আরো ভালো থাকে।আমরা চেষ্টা করব শীতকালে এই সবজিটি প্রতিদিন খাবার আমাদের হার্টের জন্য।
নাশপাতি
হার্টের রোগীদের আজ জাতীয় খাবার খাওয়া বিশেষ প্রয়োজন।আরে নাশপাতিতে আঁশ রয়েছে এছাড়াও রয়েছে পটাশিয়াম, ক্যালসিয়াম,আয়রন, কপার সহ নানা ধরনের উপাদান। হার্টের রোগীদের জন্য নাশপাতি খাবারের তালিকায় রাখার প্রয়োজন। এখন দেশেই উৎপাদিত হচ্ছে এই নাশপাতি যার কারণে সহজেই আমরা নাশপাতি পেয়ে থাকি।নাশপাতি হার্ট সহ আরো অনেক ধরনের অসুবিধা আছে শরীরের যেগুলো সারাতে সাহায্য করে।
পেয়ারা
হার্টের রোগীদের জন্য প্রতিদিন খাবারে পেয়ারা রাখা প্রয়োজন। পেয়ারাতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে পুষ্টিগুণ যা আমাদের হার্ট ভালো রাখে।থাকা পটাশিয়াম উচ্চ রক্তচাপ কমাতে সাহায্য করে যার কারণে হাট ভালো থাকে এবং আজ জাতীয় পেয়ারা খাওয়াটা বিশেষ করে বেশি প্রয়োজন। শরীরে সোডিয়াম ও পটাশিয়ামের নিয়ন্ত্রণ রাখতে পেয়ারা সাহায্য করে এবং এই নিয়ন্ত্রণ রাখার ফলে হার্ট ভালো থাকে।
আঙ্গুর
সারা বছরই এখন আঙ্গুর পাওয়া যায় আর এ ফল খেতে অনেক সুস্বাদু।আঙ্গুরে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট যা আমাদের শরীরের নানা ধরনের কথা নিয়ন্ত্রণ রাখতে সাহায্য করে।আঙ্গুরে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে পটাশিয়াম যার শরীরের উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ করে এবং হার্ট ভালো রাখে।আঙ্গুরের খোসা ও বীচে রয়েছে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট বেশি যার কারণে এগুলো ফেলার দেওয়া যাবে না। হার্টের রোগীদের খাবারের তালিকায় প্রতিদিন আঙ্গুল রাখাটা বিশেষ প্রয়োজন।
বাদাম
শুধু হার্টের সমস্যা নাই প্রতিদিন প্রত্যেকটি মানুষেরই এক মুঠ করে বাদাম খাওয়া উচিত। কারণ বাদাম ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ করতে সাহায্য করে হার্ট ভালো রাখতে সাহায্য করে এবং কোলেস্টেরল কমাতেও সাহায্য করে। বাদামের যে ধরনের উপাদান রয়েছে তা রক্তে শর্করার মাত্রা ঠিক রাখতে সাহায্য করে। প্রতিদিন কিছু পরিমাণে বাদাম খাওয়ার অভ্যাস করা উচিত সবার।
শেষ কথা
আমার মতে হার্টের রোগীদের খাবারের দিক থেকে অনেক সচেতন থাকা উচিত। শুধু হার্টের রোগীদের না যাতে হার্টের সমস্যা, কোলেস্টেরল সমস্যা, এবং ডায়াবেটিসের সমস্যা না হয় এজন্য শুরু থেকেই খাবারের প্রতি বিশেষ যত্ন রাখা প্রয়োজন বাহিরের খাবার যতটা পারা যায় কম খাওয়া উচিত।যারা হার্টের সমস্যায় ভুগছেন তারা আমার এই আর্টিকেলটি পড়ে খাবারের তালিকা করে নিতে পারেন।আমারে আর্টিকেলটি পড়ে যদি উপকৃত হন তাহলে আমার পেজটি ভিজিট করবেন।
অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url