রসুন খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা



রসুন এ রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ঔষধি গুণ। প্রায় প্রতিদিনই আমরা মসলা হিসাবে রসুন খেয়ে থাকি। অনেকেই এর গুনের কথা জানি আবার অনেকেই এর গুনের কথা জানি না। রসুনের এলিসিস নামের এক উপাদান আছে যা বিশেষ কাজ করে শরীরে যা আমাদের ক্যান্সার হওয়া থেকে আটকাতে পারে। অর্থাৎ ক্যান্সারের জীবাণুকে মারতে রসুন সাহায্য করে।
রসুন খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা


প্রাচীনকালে রসুন দিয়ে বিভিন্ন ধরনের ঔষধ বানানো হতো। রসুনের ব্যবহারে মানুষ অনেক উপকারী পেত এবং সেই সভ্যতায় রসুনের বিশেষ একটা গুরুত্ব ছিল। প্রতিদিন খালি পেটে রসুন খাওয়ার অভ্যাস করাটা সবার উচিত।

রসুনের উপকারিতা

রসুনের প্রচুর উপকারিতা রয়েছে। চলুন জেনে নিই কি কি উপকারিতা রোশনে আছে।

উচ্চ রক্তচাপ কমাতে সাহায্য করে

রসুন উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখে এবং বেড়ে গেলে কমাতেও সাহায্য করে। প্রতিনিয়ত উচ্চ রক্তচাপের কারণে অনেক মানুষ মারা যায়। রসুনের মধ্যে গুরুত্বপূর্ণ উপাদানের কারণে উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ থাকতে সহায়তা করে। আমাদের উচিত প্রতিদিন খালি পেটে দুই কোয়া রসুন খাওয়া।

টক্সিন দূর করে

প্রতিদিন খালি পেটে দুই কোয়া রসুন খেলে আমাদের শরীরের টক্সিন দূর করতে সাহায্য করে।অনেকেরই শরীরে অতিরিক্ত টক্সিন এর সমস্যা দেখা যায় এক্ষেত্রে প্রতিদিন রসুন খাওয়ার অভ্যাস করুন টক্সিন কিছুদিনের মধ্যে দূর হয়ে যাবে।

কার্য ক্ষমতা বৃদ্ধি

যাদের শারীরিক পরিশ্রমের কাজ বেশি করতে হয় তাদের বেশি পরিমাণে রসুন খাওয়া উচিত রসুনের কার্যক্ষমতা বৃদ্ধি করে। অ্যাটলেটিক পারফরম্যান্স ঠিক রাখতে রসুনের গুরুত্ব বেশি। বিশেষ করে শ্রমিক শ্রেণীর মানুষের জন্য প্রতিদিন রসুন খাওয়াটা বিশেষ দরকার।যারা অলিম্পিক খেলে তারা প্রতিদিন রসুন বেশি করে খেয়ে থাকে কারণ তাদের শারীরিক পরিশ্রমটা বেশি হয়।

হাড় ক্ষয় রোধ করে

অনেক মহিলা মেনোপজ নামের রোগে ভুগে।এ রোগের ঔষধ বলা হয় রসুনকে। প্রতিদিন রসুন খেলে হাড় ক্ষয় রোধ করে। বিশেষ করে বৃদ্ধ মানুষদের হারের সমস্যাটা বেশি হয় এক্ষেত্রে রসুন তাদের হাড় ক্ষয় রোধ করতে সাহায্য করে।

যৌন ক্ষমতা বাড়ায়

প্রতিদিন রসুন খাওয়ার ফলে রক্তে সাবলীন গতির ঠিক রাখতে সাহায্য করে। রক্তের সাবলীল গতি ঠিক না থাকলে পুরুষের যৌন ক্ষমতা কমে যেতে পারে। প্রতিদিন রসুন খাওয়ার ফলে এটি ধীরে ধীরে ঠিক হয়ে যায়। খালি পেটে দুই কোয়া রসুন খাওয়ার অভ্যাস করুন যাদের এই ধরনের সমস্যা আছে তারা সমাধান পেতে পারেন।

ফুসফুসে সংক্রমণ প্রতিরোধ

বিভিন্ন ধরনের তেল জাতীয় জিনিস বা শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কম থাকলে ঠান্ডা লাগার প্রবণতা বেশি এলার্জির প্রবণতা বেশি থাকলে ফুসফুসের অনেক ধরনের ক্ষতি হয়ে থাকে আমরা যদি প্রতিদিন রসুন খায় তাহলে আমাদের ফুসফুস ভালো রাখতে সাহায্য করবে।রসুনকে ফুসফুসের ঔষধ বলা হয়।

ত্বক ভালো রাখে

জানা যায় প্রাচীনকালের মানুষ ত্বকের বিভিন্ন দাগ মেশাতে রসুন ব্যবহার করত। প্রতিদিন রসুন খেলে ত্বকে বয়সের ছাপ পড়ে না এবং বিভিন্ন ধরনের দাগ দূর করতে সাহায্য করে। এছাড়াও হজমের সমস্যার কারণে ব্রণ দেখা দিতে পারে হজমের সমস্যা সমাধান করতে প্রতিদিন দুই থেকে তিন কোয়া রসুন খাওয়ার অভ্যাস করুন।

কাঁচা রসুনের অপকারিতা

কোন কিছুই অতিরিক্ত খাওয়া ঠিক নয় তেমনি রসনা অতিরিক্ত খেলে অনেকের অনেক ধরনের সমস্যাও দেখা দেয়। আমরা জানি রসুনের উপকারিতা বেশি তবে কিছু কিছু মানুষের জন্য রসুন অনেক ক্ষতি করে। সবকিছুই সব মানুষের সহ্য হবে এমন কথা নেই চলুন জেনে নেই কি কি ধরনের সমস্যা হতে পারে।

রসুনে একপ্রকার রাসায়নিক উপাদান থাকে যা বেশি পরিমাণে রসুন খেলে আমাদের ক্ষতি করে। অ্যালিসিন নামক উপাদান থাকে রসুনের যা বেশি খাওয়ার ফলে লিভার ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে পড়তে পারে বা লিভারের বিষক্রিয়া দেখা দেয়।

গর্ভবতী নারীর জন্য কাঁচা রসুন খাওয়া একদমই ঠিক নয়। এক্ষেত্রে প্রসব যন্ত্রণা দেখা দেয় এবং রক্তক্ষয় হতে পারে। মায়েদের অতিরিক্ত রসুন খাওয়ার ফলে দুধের স্বাদ নষ্ট হয়ে যায় এবং বাচ্চাদের পেটের সমস্যা দেখা দেয়।

রসুনে থাকে সালফার যা বেশি খাওয়ার ফলে মুখে দুর্গন্ধ সৃষ্টি করে।

অতিরিক্ত রসুন প্রতিদিন খাওয়ার ফলে প্রচুর পরিমাণে ঘাম হতে পারে। এবং রক্তচাপ কমে যেতে পারে।
খালি পেটে রসুন খেলে বমি বমি ভাব এবং গ্যাস দেখা দেয়।এমন কিছু উপাদান রসুন এ আছে যার কারণে খালি পেটে রসুন খেলে অনেকেরই বুক জ্বালা করতে পারে।

খালি পেটে রসুন খাওয়ার ফলে ডায়রিয়া দেখা দিতে পারে। বিশেষ করে বাচ্চাদের দুই তিন কোয়া রসুন আমরা খাওয়াবো না এক্ষেত্রে বাচ্চার ডায়রিয়া দেখাতে পারে যদি কেউ রসুন খাওয়ার অভ্যাস করতে যায় তাহলে অল্প পরিমাণে খাওয়ার অভ্যাস করতে হবে।

শেষ কথা

রসুনের উপকারিতায় আমরা বেশি জানি। তবে কিছু কিছু অপকারিতাও আছে। আমরা প্রতিদিন অল্প পরিমাণে অর্থাৎ এক কোয়া করে রসুন খাওয়ার অভ্যাস করতে পারি এতে করে কোন সমস্যা দেখা দেবে না। রান্নাতেও বেশি পরিমাণ রসুন দেওয়ার প্রয়োজন নেই দেখা যায়। দেখা যায় এক কোয়া দুই কোয়া রসুন সকালে খাওয়ার পরেও রান্নাতে কিছু পরিমাণে রসুন দেওয়ার ফলে বেশি খাওয়া হয়ে গেলে অনেক সময় রসুনের পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া দেখা দিতে পারে সে ক্ষেত্রে খুব সাবধানে আমরা খেয়াল রেখে খাব।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url