অ্যালোভেরার উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে জানুন



অ্যালোভেরা আমরা চিনি না এমন মানুষ হয়তো নেই। অ্যালোভেরা কে অনেকে ঘৃতকুমারী বলে ডাকে। প্রাচীনকাল থেকেই অ্যালোভেরাকে ভেষজ ঔষধ হিসেবে ব্যবহার করি। অ্যালোভেরা উপকার বলে শেষ করা যাবে না। ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে অ্যালোভেরার অনেক গুরুত্ব আছে।
অ্যালোভেরার উপকারিতা অপকারিতা
 ত্বক ও চুলের ব্যবহারে আমরা প্রাই শো অ্যালোভেরা ব্যবহার করি ।আমরা সুস্থ থাকতে সবাই চায়। অ্যালোভেরা ব্যবহারের ফলে আমাদের শারীরিক অনেক সুস্থতা নিয়ে আসে।

ভূমিকা

আগে রূপচর্চার কাজেই এলোভেরা বেশি ব্যবহার হতো তারপর বিভিন্ন বৈজ্ঞানিক পরীক্ষার মাধ্যমে জানা গেছে অ্যালোভেরার আরো অনেক অনেক উপকারের কথা ।আমরা বাজারে এর বিভিন্ন ধরনের অ্যালোভেরার জেল কিনতে পাওয়া যায় আমরা সেগুলো ব্যবহার কম করে বাড়িতে যদি প্রাকৃতিক নিয়মে এলোভেরার জেল তৈরি করে ব্যবহার বা অ্যালোভেরার জুস তৈরি করে খেতে পারে তাহলে শরীরের জন্য বেশি উপকার কারণ বাজারের অ্যালোভেরা জেলের অনেক ধরনের কেমিক্যাল ব্যবহার করা হয় যার কারণে তোকে অনেক ক্ষতি হতে পারে।

অ্যালোভেরার উপকারিতা

অ্যালোভেরার উপকারিতা বলে শেষ করা যাবে না। নানারকম ঔষুধ হিসেবে এলোভেরা ব্যবহার করা হয়। ডায়াবেটিসের মহা ওষুধও বলা হয় এলোভেরা। চলুন জেনে নিই অ্যালোভেরার কি কি উপকার আছে।

ওজন কমাতে এলোভেরা

ওজন কমানোর জন্য এলোভেরার জুস অনেক উপকারী। অ্যালোভেরাতে এমন কিছু পুষ্টিকুণ আছে যা আমাদের শরীরের চর্বি কমাতে সাহায্য করে। মিনারেল ও ভিটামিন থাকায় এলোভেরা খেলে স্বাস্থ্য ভালো থাকে। এলোভেরার জুস আমরা অনেকেই খেতে পারি না তিতার কারণে সুন্দর করে বানিয়ে মধু মিশিয়ে খেলে এটি ওজন কমাতে অনেক উপকার দিবে।

চুল পড়া কমাতে

চুল পড়া কমাতে এলোভেরার জুড়িমেলা ভার। এলোভেরা তে আছে প্রোটিয়োলাইটিক এনজাইমস নামে উৎসেচক, যা আমাদের মাথার তালু স্বাস্থ্য রক্ষা করে। নিয়মিত এলোভেরা ব্যবহার করলে কন্ডিশনারের কাজ করে এবং চুল দ্রুত বড় হতে সাহায্য করে ।

কোষ্ঠকাঠিন্য কমায়

অনেকেরই কোষ্ঠকাঠিন্যর অনেকদিন যাবত সমস্যা থাকে। সেক্ষেত্রে প্রতিদিন যদি আমরা অ্যালোভেরার জুস খায় তবে অনেক উপকার পাব। অ্যালোভেরার কোন পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া নেই ফলে কোষ্ঠকাঠিন্যর জন্য এলোভেরা জুস আমরা প্রতিদিন খেতে পারি। অ্যালোভেরার জুস অনেকে খেতে পারি না একটু তিতা লাগে এর জন্য এলোভেরার জুসে সামান্য পরিমাণে মধু মিশিয়ে খেতে পারি।

ত্বকে অ্যালোভেরার কাজ

অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট থাকার কারণে এলোভেরা ত্বকের জন্য অনেক উপকারী হয়ে উঠেছে। বিভিন্ন ধরনের ফুসকুড়ি সারাতে বা বয়সের ছাপ ত্বক থেকে দূর করতে এবং ব্রণ কমাতে এলোভেরার গুরুত্ব অপরিসীম।যারা নিয়মিত এলোভেরা ব্যবহার করেন তাদের ত্বকে উজ্জ্বলতা বেশি প্রকাশ পায়। কয়েক সপ্তাহ অ্যালোভেরা ব্যবহার করলে আপনিও বুঝতে পারবেন অ্যালোভেরার গুরুত্ব। এলোভেরা কে প্রাকৃতিক হাই লাইটার ও বলা যায়।
অ্যালোভেরার রসের সঙ্গে সামান্য পরিমাণের চালের গুড়া নিয়ে ঠোঁটে ব্যবহার করলে ঠোঁটের মৃত কোষ গুলো সারিয়ে তুলতে সহায়তা করে এবং ঠোঁট কোমল রাখে।

চুলের যত্নে এলোভেরা

আমরা কম বেশি অনেকেই জানি চুলে এলোভেরা ব্যবহারের ফলে চুল উজ্জ্বল এবং ঝলমলে হয়ে ওঠে।এলোভেরা তে আছে অ্যান্টি ব্যাকটেরিয়াল ওআন্টি ফাংগাল যা আমাদের মাথার ত্বক ত্বক এবং খুশী দূর করতে বিশেষভাবে সাহায্য করে চুল করে তুলে ঝলমলে উজ্জ্বল।তবে আমরা এলোভেরা জেল দিয়ে সরাসরি ব্যবহার না করে যদি সেটা কিছুক্ষণ ফুটিয়ে ব্যবহার করি তাহলে বেশি উপকার পাওয়া যায়।বাহিক ব্যবহার শুধু নয়, অ্যালোভেরা প্রতিদিন খাওয়ার ফলে ভেতর থেকে চুলকে মজবুত রাখে চুল পড়া অনেক কমে যায়।

অ্যালোভেরার অপকারিতা

আমরা বেশিভাগ অ্যালোভেরার উপকারিতা সম্পর্কেই জানি। কারণ এলোভেরার উপকারিতায় বেশি। তবে বেশ কিছু অপকারিতা আছে যা আজ জেনে নেব।

এলার্জি প্রতিক্রিয়া

কোন কিছুই যেমন বেশি ব্যবহার বা খাওয়া ঠিক না তেমনি অ্যালোভেরা। অনেকের অ্যালোভেরা বেশি খাওয়ার ফলে এলার্জির প্রভাব দেখা দিতে পারে। অনেক সময় চুলকানি হয় গায়ে এবং লাল লাল চাকা চাকা দাগ হয়ে যায় বা আম বাত ধরনের কিছু হতে পারে। যাদের এই ধরনের সমস্যা এলোভেরা ব্যবহারের ফলে হয় তারা ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী অ্যালোভেরা ব্যবহার করব।

গ্যাসের সমস্যা

একটু বেশি এলোভেরা জুস খাওয়ার ফলে অনেক সময় গ্যাসের সমস্যা জনিত রোগ দেখা দিতে পারে। এক্ষেত্রে পেট ভরা ভরা লাগে বা বমি বমি ভাব হতে পারে। সে ক্ষেত্রে আমরা অ্যালোভেরা কিছুদিন সেবন থেকে বিরত থাকবো।

  ঔষধের  সাথে এলোভেরার প্রভাব

অনেক সময় নানান অসুখের কারণে আমরা ডাক্তারের পরামর্শে প্রেসক্রিপশন অনুযায়ী অনেক ওষুধ খায়। সে ক্ষেত্রে ওষুধ চলাকালীন এলোভেরা সেবন করার ফলে অনেক ধরনের পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া দেখা দিতে পারে। তাই আমরা ওষুধ সেবনকালীন অ্যালোভেরা সেবন করব না বা ডাক্তারের সঙ্গে পরামর্শ করে সেবন করা উচিত।

মাতৃকালীন সময়ে এলোভেরা

গর্ভাবস্থায় বা মাতৃকালীন সময়ে এলোভেরা সেবন না করাটাই উচিত। কারণ এটা এখনো পরীক্ষিত নয় গর্ভাবস্থায় বা শিশু মাতৃ দুগ্ধ পান কালীন সময়ে এলোভেরা সেবন বা ব্যবহারে শিশুর কোন ক্ষতি হতে পারে সে ক্ষেত্রে এলোভেরা আমরা কিছুদিন ব্যবহার থেকে বিরত থাকবো।

আলোক সংবেদনশীলতা

অনেক সময় এলোভেরা জেল ত্বকে ব্যবহারের পর রোদে যাওয়ার কারণে আমাদের ত্বকে নানা রকম ফুসকুড়ি বা অ্যালার্জি বা চাকা চাকা লাল লাল দাগ হয়ে যেতে পারে সে ক্ষেত্রে এলোভেরা জেল ব্যবহারের পর সানস্ক্রিন ব্যবহার করা উচিত তবে চেষ্টা করব অ্যালোভেরা জেল ব্যবহার করে রোদে না যাওয়ার সন্ধ্যার পর বা রাতে এলোভেরা জেল ব্যবহার করলে বেশি উপকার পাওয়া যাবে।

শেষ কথা

অ্যালোভেরার উপকারিতা বেশি এটা আমরা সবাই জানি। তবে অ্যালোভেরার অপকারিতাও আছে। প্রতিদিন আমরা অল্প পরিমানে এলোভেরা জুস সেবন করার অভ্যাস করলে এটা আমাদের শরীরের জন্য বিশেষ উপকার দেয়। আর ত্বক এবং চুলের জন্য অ্যালোভেরা ব্যবহারে আমরা বাজার থেকে এলোভেরা জেল কি নিয়ে ব্যবহার না করাটাই বেশি উত্তম কারণ বাইরের অ্যালোভেরা জেলে অনেক ধরনের কেমিক্যাল মেশানোর ফলে ত্বকে আরো বেশি অ্যালার্জি বা লাল লাল চাকা চাকা এ ধরনের কিছু দেখা দিতে পারে সে ক্ষেত্রে আমরা বাড়িতে এলোভেরা জেল ফুটিয়ে তৈরি করে নিতে পারি। আমার আর্টিকেল পড়ে আপনাদের যদি ভালো লেগে থাকে তাহলে আমার পেজটি ঘুরে দেখতে পারেন।


এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url