ডায়াবেটিস কি, লক্ষণ ও এর থেকে প্রতিকার ?
ডায়াবেটিসের সংখ্যা দিন দিন বেড়েই চলেছে। প্রতিদিন বেশ কয়েকজন করে মানুষ মারা যাচ্ছে। ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে না থাকায় মানুষ মারা যাচ্ছে। অনেকে ডায়াবেটিসের কারণে স্ট্রোক করে মারা যাচ্ছে। নিয়ন্ত্রিত ডায়াবেটিসের জন্য শরীরের যে কোন অংশ নষ্ট হয়ে যায় যেমন কিডনি, হার্ট, স্নায়ু ইত্যাদি। যার ফলে হাজার হাজার মানুষ মারা যাচ্ছে। ডায়াবেটিস বেশি বেড়ে গেলেও সমস্যা বেশি কমে গেলেও সমস্যা। তাই এটা বলা যাচ্ছে না যে বেড়ে গেলে বা কমে গেলে কিভাবে মৃত্যু হতে পারে।
ডায়াবেটিস আমাদের শরীরের জন্য বিপদজনক। বেশ কিছু নিয়ম মেনে চললে ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে থাকে। আমাদের যাদের ডায়াবেটিস আছে তাদের অবশ্যই এ নিয়ম গুলো সম্পর্কে জানা উচিত। এই
আর্টিকেলের মাধ্যমে আমি আজ ডায়াবেটিস সম্পর্কে আপনাদের তথ্য দেব।
ভূমিকা
পৃথিবীতে দিন দিন ডায়াবেটিসের রোগী বেড়েই চলেছে। ডায়াবেটিস একটি চর্চিত রোগ এবং খুব জনপ্রিয়। ডায়াবেটিস একবার হলে সারা জীবনই প্রায় ওষুধ খেতেই হয়। তবে আমরা বিভিন্ন নিয়মে ব্যায়ামের মাধ্যমে খাবারের মাধ্যমে বিভিন্নভাবে ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ করার চেষ্টা করি। ডায়াবেটিস রোগীর কিডনির সমস্যা দেখা দিতে পারে বেশ কিছুদিন পরপরই ডায়াবেটিস রোগীদের উচিত কিডনি পরীক্ষা করানো। ডায়াবেটিস রোগীদের খাওয়া-দাওয়া খুব সাবধানে করতে হবে তাদের জানা উচিত কোন ধরনের খাবার তাদের খাওয়া উচিত নয়।
ডায়াবেটিকস কি?
ডায়াবেটিস এমন একটি রোগ যা হরমোনের কারণে হয়। রক্তে সুগারের মাত্রা বাড়িয়ে দেয়। ইনসুলিন নামের একটি হরমোন আমাদের শরীরের রক্তে সুগারের পরিমাণ নিয়ন্ত্রণ করে। ইনসুলিন নামক হরমোন কাজ করা বন্ধ করে দেয় বা কাজ ঠিকমত করে না তখনই আমাদের নানাবিধ সমস্যা দেখা দেয় শরীরে।রক্তে সুগারের পরিমাণ বাড়িয়ে এবং কমিয়ে দেয় যার কারণে ডায়াবেটিস হয়ে থাকে। ইনসুলিন অগ্নাশয় এর বিশেষ কোষ দ্বারা তৈরি হরমোনের কারণে আমাদের রক্তে শর্করার তারতম্য ঘটে শরীরে নানাবিদ অস্বাভাবিকতা দেখা দেয় শরীর খারাপ হয়ে যায়।
ডায়াবেটিসের ধরন
ডায়াবেটিস সাধারণত দুই ধরনের হয়ে থাকে টাইপ ১ এবং টাইপ ২ এছাড়াও গর্ভকালীন ডায়াবেটিস হয়ে থাকে। তবে আমরা টাইপ এক এবং টাইপ 2 ডায়াবেটিসের কথা বেশি শুনে থাকি চলুন জেনে নিই এগুলোর লক্ষণ।
টাইপ এক ডায়াবেটিসের লক্ষণ
- প্রচন্ড ক্ষুধা
- তীব্র তৃষ্ণা
- চোখে ঝাপসা দেখা
- বমি বমি ভাব
- ক্লান্তি ও দুর্বলতা
- চুলকানি
- অস্বাভাবিক বিরক্তি আসা
- অতিরিক্ত প্রস্রাবের অনুভূতি হওয়া
টাইপ দুই এর ডায়াবেটিসের লক্ষণ
- তীব্র তৃষ্ণা পাওয়া
- হাতে পায়ে ঝিনঝিন করা
- ঝাপসা বৃষ্টি হয়ে যাওয়া
- মেজাজের পরিবর্তন আসা
- মাথাব্যথা
- মাথা ঘোরা
- দ্রুত ওজন বেড়ে যাওয়া
- ক্ষতস্থান আস্তে আস্তে কমা
- অপ্রীতিকর গন্ধের অনুভূতি
- বগল ও ঘাড়ের কাছে কালকে দাগ হওয়া
ডায়াবেটিক্স কত হলে নরমাল?
আমাদের রক্তে গ্লুকোজের পরিমাণ ৩.৩ থেকে ৬.৯ এর মধ্যে থাকাটা ভালো এটা স্বাভাবিক বলে ধরে নেওয়া যায় খালি পেটে এবং ভরা পেটে ১১ থাকাটা ঠিক আছে এর বেশি হলে সেটা আমরা ডায়াবেটিস বলে থাকি। আমাদের দেহে ডায়াবেটিস ৪০ এমজির নিচে এবং 400 এর বেশি হলে যেকোনো সময় রোগী মারা যেতে পারে। বিজ্ঞানীরা বলেছে ডায়াবেটিকস এর এই রোগ আর কমবে না এটা দিন দিন বিশ্বে বেড়েই চলবে এবং একসময় মহামারীতে পরিণত হবে।
সুগার কেন হয়?
ইনসুলিন নামক হরমোনের কাজে ব্যাঘাত ঘটলে সুগার হয়। কারণ ইনসুলিন আপনার শরীরের রক্তের সুগারের পরিমাণ নিয়ন্ত্রণ করে থাকে। যখন বাহিরের তেল জাতীয় খাবার, ফাস্টফুড,কার্বোহাইড্রেট এ ধরনের খাবার বেশি খেয়ে থাকি তখন আমাদের শরীরে যে নির্দিষ্ট পরিমাণ ইনসুলিন থাকে সেটা বেশি খরচ হয় অর্থাৎ অধিক পরিমাণে খরচ হওয়ার ফলে ইনসুলিন কমে যায় ইনসুলিন পরিমাণ না থাকায় ইনসুলিনের কাজ করতে ব্যাঘাত ঘটে এ কারণে রক্তে সুগারের পরিমাণ বেড়ে যায়।
ডায়াবেটিস কি চিরতরে নিরাময় সম্ভব?
নিয়মিত খাওয়া-দাওয়া ধূমপান তেল জাতীয় জিনিস বেশি খাওয়া কার্বোহাইড্রেট এ জিনিসগুলো শরীরে গিয়ে ইনসুলিনের কাজে বাধা প্রদান করে ফলে ডায়াবেটিস হয় ডায়াবেটিস কন্ট্রোল করতে আমাদের নিয়মিত ব্যায়াম ও খাদ্য অভ্যাস করতে হবে। ডায়াবেটিস যদি বেশি পরিমাণে থাকে তাহলে সেটা একেবারে নিরামূল করা সম্ভব হয় না ঔষধ খেতে হয়
।
প্রথম অবস্থায় আমরা যদি আমাদের খাদ্যাভাস ও ব্যায়াম করি তাহলে ডায়াবেটিক নিয়ন্ত্রণে রাখা সম্ভব। এবং পাশাপাশি বিভিন্ন ধরনের খেলাধুলা ও ব্যায়াম করতে হবে। সব ধরনের খাবার আমরা খেতে পারবো না ,যে ধরনের খাবার ডায়াবেটিস হলে খাওয়া যায় সে সম্পর্কে জেনে সেই খাবারগুলি খেতে হবে এভাবে নিয়ম মেনে চললে ডায়াবেটিস নিরাময় করা সম্ভব।
ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে রাখতে কি কি করা উচিত?
বাড়িতেই আমরা ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণের জন্য অনেক কিছু করতে পারি। চলুন দেখে নিই ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণের জন্য কি কি করা উচিত।
- চিনি জাতীয় খাবার একদমই খাব না।
- প্রতিদিন কমপক্ষে৪০ থেকে ৫০ মিনিট হাঁটবো।
- শারীরিক পরিশ্রম করতে হবে।
- এর মাধ্যমে শরীর থেকে প্রচুর ঘাম ঝরাতে হবে।
- ব্যায়াম শুরু করতে হবে এবং আস্তে আস্তে তা বাড়াতে হবে।
- আজ যুক্ত খাবার বেশি করে খেতে হবে।
- মাটির নিচে যে সমস্ত শাকসবজি হয় সেগুলো খাওয়া যাবে না।
লেখক এর মন্তব্য
আমার মতে ডায়াবেটিস যখন প্রথম ধরা পড়বে তখন থেকে আমাদের নিয়মকানুন এর মধ্য দিয়ে চলতে হবে। ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে থাকবে এমন যে সমস্ত কাজ আমাদের করতে হবে এবং যা যা খেতে হবে সেগুলো মেনে চলতে হবে। বাইরের খাবার একদমই খাওয়া চলবে না এবং তেল জাতীয় খাবার বাড়িতেও কম করে খেতে হবে। কিছুদিন পরপরই নিয়মিত আমাদের ডায়াবেটিস পরীক্ষা করতে হবে কিডনি পরীক্ষা করতে হবে। ডাক্তারের সঙ্গে সবসময় যোগাযোগ রাখতে হবে। আমারে আর্টিকেল পড়ে যদি আপনাদের ভালো লেগে থাকে তাহলে আমার পেজটি ভিজিট করতে পারেন।
অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url