শিশুর খাবারের তালিকা
শিশুর জন্মের পর থেকেই মায়ের দুধের প্রয়োজন। ছয় মাসের পর থেকে একটি শিশুকে আমরা বাড়তি খাবার দিয়ে থাকি।। একটি শিশু আস্তে আস্তে বড় হবে আর তার শরীরের সাথে প্রয়োজনীয় খাবার আমাদের দিতে হবে। শিশুর অন্যান্য খাবারের সাথে দুই বছর বয়স পর্যন্ত মায়ের দুধ খেতে পারে। চলুন আমরা জেনে নিই জন্মের পর থেকে শিশুকে কি কি খাবার দেওয়া যায়।জন্মের পর থেকে কি কি খাবার দেবো।
জন্মের পর পরই সর্বপ্রথম শিশুকে মায়ের দুধ খাওয়াতে হবে।
একটি মায়ের পর্যাপ্ত পরিমান দুধ না এলে চিকিৎসকের পরামর্শ মত ওষুধ খেতে হবে।
মায়ের দুধের বিকল্প একটি শিশুর জন্য কিছুই হয় না। তাই ৬ মাস বয়স পর্যন্ত পর্যাপ্ত পরিমাণের মায়ের দুধ যাতে শিশু পান করতে পারে সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে।
ছয় মাস পর থেকে আমরা একটু একটু করে শিশুর পুষ্টিগুণের বিচার করে শিশুকে পুষ্টিগত খাবার দেওয়ার চেষ্টা করব।
* ছয় মাস বয়সের পর থেকে শিশুর খাবার
ছয় মাস বয়সের পর থেকে শিশুকে চার থেকে পাঁচবার দিনে খাবার দিতে হবে। এবং প্রত্যেকবারই পুষ্টিগত খাবার দেয়ার চেষ্টা করবেন। তবে এ খাবারগুলো যেহেতু শিশু প্রথমবার শুরু করছে তাই পরিমাণে খুব অল্প অল্প করে দিতে হবে।
- সকালের দিকে আপনারা শিশুকে দুধ দিতে পারেন।
- -চালের গুড়া বা সুজি দুধের সঙ্গে মিশিয়ে ঘন করে জাল দিয়ে সেটাকে শিশুকে দিতে পারে।
- -সকাল এবং দুপুরের মাঝখানে একবার শিশুকে খিচুড়ি দিতে পারেন। খিচুড়িটা এমন করে রান্না করতে হবে যার মধ্যে চাল, ডা্ মুরগির মাংস, সয়াবি্ লবণ, একটু শাকসবজি সবকিছু মিশিয়ে খিচুড়িটাকে রান্না করে পেস্ট করে শিশুকে খাওয়াতে পারেন।
- -বাড়িতেই ডিমের পুডিং বানিয়ে শিশুকে একবার দিতে পারেন।
- - নরম ভাতের সাথে একটু মাছ মাংস ডাল মিশিয়ে খাওয়াতে পারেন
- - শিশুকে কয়েক ধরনের ফল দিতে পারেন যে ফলগুলো একটু নরম জাতের হবে। যেমন আম কলা পেঁপে কমলা।
- -আপেল বেশ কিছুক্ষণ সিদ্ধ করার পর সেটা পেস্ট করে শিশুকে দিতে পারেন।
* এক বছরের শিশুদের খাবার
শিশুর বয়স এক বছর হয়ে গেলে আমরা বাড়িতে থাকা সব ধরনের খাবার শিশুকে দেওয়ার চেষ্টা করব। অবশ্যই অতিরিক্ত তেল মসলা খাবারে ব্যবহার কম করব এতে করে শিশুর শরীর সুস্থ সুন্দর থাকবে।
এক বছরের শিশুদের বেশ কয়েকটি দাঁত উঠে যায় এর কারণে এরা সব ধরনের খাবার অনায়াসে খেতে পারে। আমরা চেষ্টা করব শিশুদের হাতে টুকরো খাবার দেবার যাতে করে নিজে থেকে খেতে পারে।
পেস্ট করে খাবার খাওয়ানো বন্ধ করা উচিত তাছাড়া শিশুদের অভ্যাস হয়ে যাবে পেস্ট করে খাওয়ানোর।
এক বছর বয়সের পর থেকে আমরা খাবারে নুন চিনি এবং মধু দিতে পারি। কিন্তু সেটা খুবই সামান্য পরিমাণে কারণ অভ্যাস করতে শিশুর কিছুদিন সময় লাগবে পেট খারাপ হতে পারে। তারপর ধীরে ধীরে চিনি মধু নুনের পরিমাণ পরিমিত রাখার চেষ্টা করবেন।
এক বছর পর থেকে শিশুকে গরুর দুধ দিতে পারেন। তবে শিশুর যদি এলার্জির কোন প্রবলেম থাকে সেক্ষেত্রে ডাক্তারের পরামর্শ মত গরুর দুধ খাওয়াতে হবে।
শিশুকে ওটস ভাত রুটি অল্প অল্প করে খাওয়াতে হবে। বিভিন্ন ধরনের বিভিন্ন ধরনের সবজি দিয়ে যেমন পটল মটরশুঁটির গাজর টমেটো মিষ্টি কুমড়া শাকসবজি বিভিন্ন জাতের অল্প অল্প পরিমাণ দিয়ে সেটাকে খিচুড়ি করে আপনারা শিশুকে এক বার করে খাবারের তালিকায় রাখবেন।
চেষ্টা করবেন শিশুকে একই দিনে মাছ মাংস এবং ডিম একসঙ্গে না খাওয়ানোর।
মাছ মাংস ডিম একসঙ্গে না খাইয়ে সেটাকে ভাগ ভাগ করে অল্প অল্প করে বিভিন্ন সময় দিতে পারেন।
বিভিন্ন ধরনের ফল প্রত্যেক দিনই একটু একটু করে দেওয়ার চেষ্টা করবেন।
* দুই বছরের বাচ্চার খাবার
- দুই বছরের বাচ্চার খাবার তালিকায় মৌসুমী ফল রাখা বিশেষ প্রয়োজন।
- বিভিন্ন ধরনের ডাল খাওয়াতে পারেন যেমন মুগ ডাল, মসুর ডাল।
- বিভিন্ন ধরনের সবজির মধ্যে মিষ্টি আলু মিষ্টি কুমড়ো, আল্ গাজর, মটরশুটি ফুলকপি ব্রকলি কুমড়ো পালং শাক ইত্যাদি সব সবজি খাওয়াতে পারে।
- স্বাদ এবং স্বাস্থ্যে ভরপুর কিছু খাবার বানিয়ে বাচ্চাকে দিতে পারেন। সিদ্ধ বা ঘ্যাট জাতীয় খাবার বাচ্চাকে কম দেয়ার চেষ্টা করবেন এতে করে বাচ্চার খাওয়ার প্রতি অনিহা দেখা দেয় কারণ খাবারে তেমন টেস্ট থাকে না। মুরগির মাংস অল্প পরিমাণে খাসির মাংস, ডিম খাবারের তালিকাই রাখতে পারেন।
অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url